বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন

চাকুরী না করেই বেতন-ভাতা উত্তোলন!

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি॥

ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈল মহিলা ডিগ্রী কলেজের রসায়ন বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আলোচনা আর গুঞ্জনের পর গত ১৬ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মোঃ তবিবর রহমানের ব্যাংক হিসাবে বেতন-ভাতা জমা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক আকবর আলীর মৃত্যুর পর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করলে সরকারিভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিশেষ শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ প্রক্রিয়া সমাপ্ত করার সুযোগে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ তফিল উদ্দীন গভর্ণিং বডির সদস্যগণের নিয়োগ সংক্রান্ত সভা ও সহি স্বাক্ষর ছাড়াই রসায়ন বিষয়ে মোঃ তবিবর রহমান নামে একজনকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে বেতন-ভাতার জন্য গত মার্চ মাসের ২০১৮ সালে এমপিও কপিতে নাম সংযোজন করেন, যার ইনডেক্স নং ৩০৯৬৪৯৮। অবৈধভাবে নিয়োগের কারণে উক্ত তবিবর রহমানের সরকারি অংশের বেতন-ভাতা সকল শিক্ষক-কর্মচারীর বিল ভাউচারে সাথে গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যাংকে জমা করা হয়নি। গত ১৬/১০/২০১৮খ্রিঃ তারিখে উক্ত তবিবর রহমানের নামে পৃথক বিল ভাউচারে জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর/২০১৮ পর্যন্ত তিন মাসের সরকারি অংশের বেতন-ভাতা প্রথমবারে মতো ব্যাংকে তার একাউন্টে অধ্যক্ষ মহোদয় জমা করেন। অপর দিকে মার্চ হতে জুন ২০১৮ পর্যন্ত চার মাসের বেতন ভাতা ব্যাংক হতে ফেরত যায়।

নিয়োগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মোঃ তফিল উদ্দীনের সাথে শিক্ষকগণের বেশ কয়েকবার সভা হলেও অধ্যক্ষ এই নিয়োগের বিষয়টি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান এবং সঠিক তথ্য দিতে অপরাগত হওয়ায় বিষয়টি আজও ঝুলে আছে। কলেজের সে সময়ের গভর্ণিং বডির বেশ কয়েকজন সদস্য জানান, আমরা এই নিয়োগ সম্পর্কে কিছুই জানিনা, তার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন দিন সহি স্বাক্ষর করি নাই। এমনকি কোথায়, কখন এই নিয়োগ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা আমরা জানিনা। ডিজির প্রতিনিধি, বিষয় বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি কে ছিলেন তাও জানিনা। গভর্ণিং বডির বিগত মেয়াদের শিক্ষক প্রতিনিধিগণও ঐ শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। কথিত নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের কোন এক তারিখে দেখানো হলেও এই শিক্ষক কোন দিনই কলেজে উপস্থিত হয়ে পাঠদানে অংশ গ্রহণ করেননি এবং শিক্ষক হাজিরা খাতায় তার নাম ও সহি-স্বাক্ষর নেই।

এ বিষয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ সাদেকুল ইসলাম ও মোঃ রবিউল ইসলামের সাথে কথা বললে তারা জানান আমরা এ নিয়োগ বিষয়ে কিছুই জানিনা। উপাধ্যক্ষ মহাদেব বসাকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। অধ্যক্ষ মোঃ তফিল উদ্দীনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অনিচ্ছুক।

উক্ত কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, নিয়োগটি অবৈধ বলেই ঐ প্রভাষক কলেজে কোন দিনই পাঠদানে অংশগ্রহণ করেননি এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি। আর এভাবে চাকুরী না করেই বেতন-ভাতা উত্তোলন করায় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীগণ এই অবৈধ নিয়োগের সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com